স্তব্ধ নিরুচ্চারিত বসে আছি
মেহফিল প্রশয়ে দরদিয়া
অক্ষরেখা জানি
যেভাবে জানি দুধের পাগলামি
পোড়া দুধ গন্ধ ছড়াল ভ্যাপসা গরমে
হ্যান্ডবিল কুঁচকে পানিওয়ালার সরু নল
ভরকেন্দ্রে এখন এসেছি নির্ভার
ও প্রিয় বন্ধু সবটুকু গহীনে
চারণ ছুঁয়ে দেখে যা দারুচিনিবাহার
#
পুরোনো যোনীর তীরে
চাপা শ্বাস ফেলে নামিয়ে রাখলি
শিকড়ে-বাকড়ে মায়ার প্রলেপ
আজানকে নামিয়ে এসেছি পুরোনো ঘরে
এতসব কিছু অতীত হচ্ছে- খানেকটা বয়স বাড়ছে
ওদিকে তবে পুরাতনী নামে কেন কোন স্মৃতি
নেই?
হাতড়ে যাচ্ছি শুধু স্তনের ভরসা
মা বলে ফেটে যেতে দেখেছি পাখীর শিস্
আঁকড়ে ধরছি প্রবল
মাটি খামচে যেভাবে পাখীদের ঘরে ডিম
কত গভীরে হাত চলে যায়
মুঠোর প্রকাশে মুখের আদল
#
যেখানে পিঙ্গল গুম্ফার ক্ষণ তাপ
যেখানে সহজিয়া আনমন ঝুমুর নিদ্রা
আমরা দেখেছি স্রোতটায় আজলা দরিয়া
বড় নিভৃতে সরে গিয়েছি ভিক্ষুকের লোনা পরাগে
তোমার কাছে আসার ছিল এটুকু জেনেই
প্রস্তুতিপর্ব জমিয়েছি প্রতি অনুনয়
একবার শুধু উপাচারে শান্ত বল
শুধু একবার হাত টেনে পুরোটা বা আরো বেশী
এ জন্মে ঘুমের বিপজ্জনক
সংকেত পেড়িয়ে এসে যে ঝর্ণা জন্ম
তাকে তো ভালবাসা বলে জানি
স্মরণযোগ্য কোনো উজ্জ্বল জানি নেই
নেই কোনো রসুন ছড়ানো তেজিয়াল
কুঁকড়ে পুঞ্চিত হয়ে যাই যেইক্ষণ
কপালে ঠোঁট নেমে আসে
তোকে শুধু বলে রাখি
শব্দের শ্রুতি ক্ষোভ
তোকে আমি খুব
আঁচড়ে ডাকি
রোহিনী বিভাব
#
আমাদের দিগ্বিদিক
সূক্ষ্ণ আঁকড়ে ঘুমজাগানিয়া
দুটো ভারী পাথর ঝুলছে গলার নীচে
কোমরের খাঁজে বসে
স্তন খুঁটে খুঁটে কারুবাকী পোড়াচ্ছি
যে তুমি কাছে আসলে এতটা স্বচ্ছ
দূরেও দেখায় নিপুন গম্ভীর
গলা দীর্ঘ হল
দশভুজার রঙীন গোলক
চন্দ্রহার দুলিয়ে সামনে উঠে এল যে
তাকে দেবী ভাবার আগে
জল দিয়ে কাদা ঘেটে সন্ধ্যা বানাই
#
কিভাবে বলার ছিল কোঁচকানো রাতের উষ্ণ
কথা খুঁড়ে একবার মুখ তুলে আনছি
আবার উঠে আসছে চায়ের বাগান
মাথার খোঁপায় গন্ধের সাম্রাজ্য
পাতা জমিয়ে সাজাচ্ছি শয্যা
ছায়াসুনিবিড় গাছ উল্টে এলো
ছত্রখান বুকের উপরে স্তনের কুচি
হাঁটু মুড়ে বসে দিকভ্রান্ত আকাশকে
শোনাচ্ছি মোহনা নুপূর শব্দ
আমাদের জঙ্গলের যৌথ আজ ঘাসের চাদরে পাতা
হয়েছে
সেখানে হাতে হাত রেখে পরিপাটি চান্দ্রকোষ
#
বলা হয়ে ওঠে না
যেদিন অপেক্ষার ভিতর হতে রঙ দেখলাম
যে সময় নিঝুম বলে ভুল করে বসি
তোর চোখের কাঞ্চন নীল
তালুবন্দী ভিখিরি তন্দ্রা
বলা হয়ে ওঠে না
মনি কিসকুর তিক্ত শ্বাস
মত্যুভয় ধরা দিয়ে যায় পললরহিত
দমকা মেঘ শণিতের লিখিত ঘাম
তোকে শুধু তোকে বাজিকর সফেন গন্ধে
একফালি বিম্ববতী ওষ্ঠ
কুড়িয়ে এনে দিয়েছি
যেভাবে বলি নি
স্মৃতির সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে পরিশ্রুত উপশম
অভিমুখগুলো রোদের বিহনে
খুঁজছে জলছাপ আপেলের বন
ওগো বাতির সাঁঝ ও চোখে তো গোধূলি
মায়ের গোড়ালি আর আলতার চিড়
তেপান্তর জড়ানো রেখাবে ট্রাপিজের বিলক্ষণ
ওগো সাঁঝ চোখের তুণীরে সে তো নির্জন
বড় আপন তোর মায়াবী হাত ও হাতের বসন্ততিলক
#
এত বৃষ্টি পাঠাচ্ছি কেন আজ জানা নেই
এতো দহন ছুঁড়ে অভিমানী তন্দ্রা চাইছে গ্রামাঞ্চল
তোর গার্হস্থ্য শীতের পোষাকে
উদভিন্ন পাখীদের স্মৃতি
যারা আজও খুঁড়িয়ে হাঁটে
ভারী স্তনের মখমলে
যে রাত কাটিয়েছি শিরিষ কাগজে ঘষে ঘষে
তার দুফোঁটা শুদ্ধ
আমাদের বাড়ীটা ওই পাহাড়ের ঢালে
সেখানে সন্ধ্যায় মুখচোরা খঞ্জনী ভাসে
#
ঠোঁট রেখেছিলি এই তপ্ত মহোরকুঞ্জে
চুরমার হওয়া মেহগিনি শ্যাওলা
ফেরার গল্পটুকু তোর প্রোতাশ্রয়ে
উপচে যায় দহনকাল
আড়াল থেকে দেখে রাখি
স্কুল ফেরতা শাড়ির আঁচল
একটা টগর জন্মেছে গলির মুখে
শাটারের রঙ বদলে গেল একদিন
সন্ধ্যে হলে অন্ধকার জাপটে
ঘুরে আসি
শ্রাবণ ভেজা দোলনার খাঁজে
সই নাম লুকিয়ে ওগো সন্ধ্যা অপেরা
বড় নিভৃত কোল খুঁজি
#
আমাদের সংকীর্তনে আগমনী সংশয়
ছিলো কি কবেকার প্রাচীন মেঘের উদ্ভাস
কোনো কথা মুখ ফুটে আসেনা
চুমুতে নেশাতুর বেগুনী আকাশ
পুড়ে যাচ্ছে ফুটে চলা হরিণা
বন্ধ চোখে ছুঁয়ে থাকা স্নায়ুরেখা
ভোরবেলা আজানের পথ এসো ডুবে যাই
খালি চাঁদ সকালে সুনীলে স্থানুবৎ দুটি হাত
কোলে তুলে নিতে জানে মায়েরা যেভাবে
সদ্য ঘুম ভাঙ্গা শিশুটিকে
#
জানিনা আয়ুর ব্যসার্ধ
তাকে ছিঁড়ে পরিখা টেনে বন্ধ রাখছি নবজাতক
পায়ের নীচ হতে নিপুন তুলির টানে জন্মে যাচ্ছে
অঙ্গসজ্জা
মাঝরাতে উঠে আসা পা খুলে নিতে জানে বিষন্নতার
রঙ। কতটা নির্মোহ আর লেপ্টে থাকে।
হাত চুলে পড়তেই সেগুলি এক একটা রঙ্গীন সুতো
এবার বোনা হবে নকসিকাঁথা! এসব আয়োজনের মধ্যিটায়
বসে রঙের সুতো মিলিয়ে, চুল খুলে, আঁচড়ে, বেনী বেঁধেছিলি- অভিমানী মায়াক্ষণ জড়িয়ে
নক্সা আঁকা ঢালুতে গোধূলি জমে
#
বলেছি কি সকালের ব্যস্ততার প্রান্ত ছুঁয়ে
যেদিন জলে ধোঁয়া গাড়ী অপেক্ষা করছিলো আর আমি তন্তুর বায়নায় অতিশয় সামিয়ানা ছিঁড়ে আত্মসাৎ
করছি দীপান্তর। সেদিন কি অদ্ভুত শুনশান হয়ে গিয়েছিল। স্বপ্নের মধ্যেও যেদিন দেখলাম
মদিরা, চন্দন ও রক্তিম হুতাশনের আলকাপ- যে দিনগুলো আফগানী ভাবের জঙ্ঘা। দূর থেকে সিঁড়ির
ওপরে উৎসর্গীকৃত জোৎস্না ভেবে শান্ত দাঁড়িয়ে দেখি, কি অনাবিল নিরুপম এসে জুড়ে যাচ্ছে
নাভির পরিখায়।
#
মুখের কাছে মরুময় প্রশ্বাসের রুহিতন
পরবাস ও মন যেখানে ছায়ার প্যালেট
কুসুমে গ্রীবা যূথি, বেলা পোহালো
প্রলেপের মাঝে বসে বলে যাই আহ্লাদী দোষীমুদ্রা
ছায়াপুঞ্জ চুমুতে
ফাগুনের কাছে করেছি তোকে দান
যেসব মুদিয়ালি বারবার ছড়িয়ে দিই উত্তুরে
ক্যানোপিতে
আর বৃষ্টির শব্দ দূর হতে ক্রমশ কাছে